স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের ভূমিকা - রচনা সম্পর্কে জানুন

 

Imade

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের ভূমিকা - রচনা 

ভূমিকা

স্মার্ট বাংলাদেশ হল সরকারের একটি বিশেষ স্লোগান এবং প্রতিশ্রুতি যা বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের পরিকল্পনা করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম প্রতিশ্রুতি দেন ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করা হবে। তিনি প্রথম ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং তা বাস্তবায়ন করেন।

পরবর্তীতে তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। আর বাংলাদেশ সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিমা শিল্পের ভূমিকা কে প্রাধান্য দিয়েছেন কারণ একটি দেশ গড়ার জন্য আর্থিক সংগতি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আর এ বীমা শিল্প হল এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানি যা তার গ্রাহককে তার বিপদের সময় আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশে বীমা কোম্পানী ১৯৫৪ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৭২ সালে এর জাতীয়করণ করা হয়।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬০ সালের ১লা মার্চ তিনি আলফা ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন আর এই দিনকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই প্রতিবছর পহেলা ১লা মার্চ জাতীয় বীমা দিবস ঘোষণা করা হয় এবং পালন করা হয়।

স্মার্ট (Smart) বাংলাদেশ

স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে বোঝানো হয়েছে প্রযুক্তি নির্ভর জীবন ব্যবস্থা আর এই জীবন ব্যবস্থায় থাকবে নাগরিক সেবার সকল কিছু উপাদান যেখানে নাগরিক ভোগান্তি ছাড়া প্রতিটি নাগরিক তার অধিকারের নিশ্চয়তা পাবে এবং তার কর্তব্য পালন করার সে সুযোগ-সুবিধাও লাভ করবে। আর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি  হল বাংলাদেশ সরকারের একটি স্লোগান এবং প্রতিশ্রুতি, যেখানে সরকার প্রতিষ্ঠিত করবে টেকসই, সাশ্রয়ী ও বিজ্ঞানভিত্তিক বাংলাদেশের মেধা এবং পরিশ্রমের জয়গান।

বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করবে এবং তা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশে হিসেবে বাস্তবায়ন করবে। স্মার্ট বাংলাদেশে স্বাধীনতা এবং সাম্য দখল করে নিবে শোষণ ও বৈষম্যের জায়গা। তাই ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ  ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত হলে মানুষের জীবন যাপন হবে সহজ, সরল এবং সবকিছু থাকবে হাতের মুঠোয়।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় শেখ হাসিনা ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং এই ভাষনে তিনি আরো বলেন" আমরা আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলব এবং বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ"। ভারতের স্মার্ট সিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে স্মার্ট শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী চারটি রূপরেখায় ভাগ করেছেন -

স্মার্ট ইকোনমি

স্মার্ট গভর্নমেন্ট (government) 

স্মার্ট সিটিজেন (Smart citizen)

স্মার্ট সোসাইটি

স্মার্ট বাংলাদেশ হবে বিজ্ঞান ভিত্তিক, উদ্ভাবনী, সাশ্রয়ী, টেকসই এবং বুদ্ধিদীপ্ত। এক কথায় স্মার্ট বাংলাদেশ যেমন শহরকে স্মার্ট করবে তেমনি তার সাথে গ্রামকেও স্মার্ট করবে। গ্রামের স্বাস্থ্যসেবা, স্মার্ট পরিবহন, স্মার্ট ইউটিলিটি, নগর, প্রশাসন, জননিরাপত্তা, কৃষি, ইন্টারনেট সংযোগ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে। ছাড়াও শিক্ষার্থীদের অনলাইনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে এবং প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ এবং এদের স্বপ্নের উদ্যোগ নেয়ার কথাও এখানে বলা হয়েছে।

আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ হলো তরুণ সমাজ। আর এই তরুণ সমাজকে দক্ষ এবং যোগ্য করে গড়ে তুলতে পারলেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন সার্থক হবে। আর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রয়োজন অর্থ অর্থাৎ নিশ্চিত অর্থ আর একমাত্র বীমার মৌলিক ভূমিকা হল ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং দেশের সমৃদ্ধি এবং বৃদ্ধির জন্য অর্থনীতি কে রক্ষা করা। আর দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে পারলে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন সার্থক করা সম্ভব।

বীমা কি বা কাকে বলে

বীমা হলো একটি বিশেষ কোম্পানি যেখানে একজন গ্রাহক টাকা সঞ্চয় করে এবং বীমা কোম্পানিগুলো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টাকা বা প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে তাদের মূলধন বৃদ্ধি করে এবং এর বিনিময়ে গ্রাহকের জীবন, মালামাল বা বিভিন্ন সম্পদের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি সুনির্দিষ্ট ঝুঁকি স্থানান্তরের দায়িত্ব গ্রহণ করাকে বোঝানো হয়। বীমা হল আর্থিক বিভিন্ন প্রকার ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে মুক্ত থাকার একটি সুরক্ষা বা গ্যারান্টি। 

আবার বীমা কোম্পানি গুলো দ্বারা বিভিন্ন চুক্তিকে ও বীমা বলা হয় যেখানে গ্রাহক বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা পায় এবং বিভিন্ন ক্ষতিপূরণ পেয়ে থাকে। অর্থাৎ বীমা হল এমন একটি পদ্ধতি যেখানে একজন গ্রাহক আস্থার সাথে এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করতে সহায়তা পেয়ে থাকে।

বীমা শব্দের অর্থ

বীমা শব্দের অপর নাম হল ইন্সুরেন্স আর এই বীমা শব্দের অর্থ হলো চুক্তি। বীমা শব্দটি মূলত ফারসি শব্দ এবং এর অর্থ হল দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বা দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি। অর্থাৎ বীমা কোম্পানি এবং বীমা গ্রাহকের মধ্যে একটি সাধারণ চুক্তি যেখানে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য বীমা কোম্পানির সঙ্গে গ্রাহক চুক্তিবদ্ধ হয়ে থাকে এবং নির্দিষ্ট কিছু অর্থ বা প্রিমিয়াম জমা করে এবং এর বিনিময়ে কোম্পানিগুলো গ্রাহককে তার ভবিষ্যতের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। বাংলাদেশে অনেক ধরনের বীমা বা ইন্সুরেন্স কোম্পানি রয়েছে।

বীমার ইতিহাস

বীমার ইতিহাস অনেক প্রাচীন। ১৮৬৫ সালে ব্রিটেনে সর্বপ্রথম বীমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এই বীমাটি ছিল নৌ বীমা। আর এই বীমা তৈরির প্রধান কারণ ছিল ১৯৬৬ সালে লন্ডনে এবং ১৮৬১ সালের টালি অ্যাসিস্ট এর অগ্নিকাণ্ডের ফলে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল এই ক্ষয়ক্ষতির কথা চিন্তা করে ব্রিটেনে এই বীমাটি চালু করা হয়। এরপরে ১৮৯৬ সালে উদ্ভব ঘটে একে আবার লাইফ ইন্সুরেন্সও বলা হয় এবং এই জীবন বীমা ও শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ডে।

বর্তমানে সারা বিশ্বে বীমা ছড়িয়ে পড়েছে আর এই বীমা ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপীয় উপনিবেশের মাধ্যমে। এছাড়াও মনে করা হয় চতুর্থ শতাব্দীতে ইতালির জেনোয়া বন্দর এবং ভূমধ্যসাগরের উত্তর অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ইউরোপে আরো কয়েকটি দেশে ব্যবসার প্রচলন শুরু করার জন্যই বীমা প্রচলন করা হয়। পরবর্তী সময়ে যখন ইউরোপে শিল্প বিপ্লব ঘটে তখন অর্থনীতি ঝুঁকির সম্মুখীন হয় এবং এই ঝুঁকি মোকাবেলা করার জন্যই ইউরোপীয়রা বীমা কে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেয়। আর এভাবেই ধীরে ধীরে বীমা পুরো বিশ্বে পরিচিত হয়ে ওঠে।

 বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট রচনা

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url